published : ২১ জুন ২০২৪
আজ ২১ জুন, International Day of Yoga বা আন্তর্জাতিক যোগ দিবস। বিশ্বজুড়ে দশমবারের মতো উদযাপিত হচ্ছে দিবসটি।
সময়ের সাথে সাথে ক্রমান্বয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ইয়োগা বা যোগব্যায়াম। সুস্থ হতে এবং সুস্থ থাকতে যোগব্যায়াম বেশ কার্যকর। এমনকি আধুনিক ফিজিওথেরাপির পরিপূরক ও কার্যকরী বিকল্প হতে পারে যোগব্যায়াম। ফিজিওথেরাপির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশই হলো যোগব্যায়াম।
ফিজিওথেরাপি শব্দটিতে রয়েছে দুটি অংশ- ফিজিও বা ফিজিকেল এবং থেরাপি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) নির্দেশনা অনুযায়ী ফিজিওথেরাপি বা ফিজিক্যাল থেরাপি একটি স্বতন্ত্র চিকিৎসা পদ্ধতি। দন্ত চিকিৎসা বা শল্য চিকিৎসার মতোই এটি একটি চিকিৎসা শাখা। একজন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক ফিজিওথেরাপির ধারা অনুযায়ী রোগীর রোগ নির্ণয় করেন এবং চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করেন।
ফিজিওথেরাপিতে বিভিন্ন ধরণের শারীরিক ব্যায়ামের মাধ্যমে রোগ নিরাময় করা হয়। এটি একটি প্রচীন চিকিৎসা পদ্ধতি, যা অসুস্থতার উপশম এবং ব্যাথা বা যন্ত্রণা কমাতে সাহায্য করে। এর মূল লক্ষ্যই হলো দৈনন্দিন জীবনে চলাফেরা যেন ব্যথামুক্ত হয়।
ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে আমরা যেসব সমস্যা থেকে নিরাময় পেতে পারি সেগুলো হলো–
বিভিন্ন ধরনের ব্যথা- ঘাড়, কাঁধ, পিঠ, কোমর ও হাঁটুর ব্যথা, বাত-ব্যথা, আঘাতজনিত ব্যথা, প্যারালাইসিস, স্পোর্টস ইনজুরি ইত্যাদি।
এ-ছাড়াও বড় কোনো অস্ত্রোপচারের পর রোগীকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার অন্যতম প্রধান চিকিৎসাই হলো ফিজিওথেরাপি।
ইয়োগা বা যোগব্যায়াম হল শরীর আর মনকে যুক্ত করে সুস্থ থাকার এক প্রাচীন পদ্ধতি। আসলে ইয়োগা বা যোগ শুধু ব্যায়াম নয়, যোগ কথার আসল অর্থ হল চেতনা।
নিয়মিত যোগচর্চার মাধ্যমে অসুস্থ শরীর রোগমুক্ত ও সুস্থ হয়ে ওঠে, সুস্থ শরীর হয়ে ওঠে আরও সতেজ। চঞ্চল ও দুশ্চিন্তাগ্রস্থ মন হতে থাকে শান্ত।
ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে আপনি যে উপকারগুলো পেতে চান তার অনেকগুলো আপনি পেতে পারেন শুধু যোগব্যায়াম অনুশীলন করে।
দীর্ঘসময় ধরে চেয়ারে বসে কাজ করার ফলে অনেকে ব্যাকপেইন ভোগেন। ওষুধ ব্যাকপেইনের ফলপ্রসূ সমাধান দিতে পারে না। এক্ষেত্রে ব্যথা নিরাময়ে কার্যকরী উপায় হলো যোগব্যায়াম।
বর্তমান সময়ে হাড়ক্ষয় একটি বড় সমস্যা। হাড়ক্ষয় রোধে যোগব্যায়াম বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। আমরা ব্যায়ামের মাধ্যমে আমাদের মেরুদণ্ড ও কোমরের যত্ন নিতে পারি।
যোগব্যায়ামের মধ্যে সেরা হলো কোয়ান্টাম ব্যায়াম, যেখানে যোগাসনগুলোর সাথে যুক্ত হয়েছে ভিজুয়ালাইজেশন বা মনছবি। আসন চর্চার সময় যখন আপনি আত্মনিমগ্ন হবেন তখন আপনার দেহমন শিথিল হয়ে পেশীর খিটখিটে ভাব দূর হবে। ফলে উপশম হবে শরীরের ব্যথাবেদনা।
যোগব্যায়ামের মাধ্যমে আমাদের শরীরের বাইরের অঙ্গের পাশাপাশি ভিতরের অঙ্গেরও ব্যায়াম হয়। যোগাসনগুলোর মধ্যে কিছু আসন আছে যেগুলো আমাদের হৃদপিণ্ড, ফুসফুস ও কিডনির কার্যক্ষমতা বাড়াতে চমৎকার কাজে দেয়।
আমরা যারা আমাদের বয়স ধরে রাখতে চাই তাদের জন্য যোগব্যায়াম একটা কার্যকরী টনিক হতে পারে।
জিম এক্সারসাইজের মতো ইনস্ট্রুমেন্টাল ব্যায়ামে প্রচুর খেতে হয়। কিন্তু যোগব্যায়াম করলে তা লাগে না। এতে থাকে না ওজন বেড়ে যাবার ঝুঁকি। বরং যোগব্যায়ামের মাধ্যমে আমরা আমাদের শরীরের হরমোন প্রবাহ ঠিক রেখে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি।
যোগের একটি অনুষঙ্গ হলো প্রাণায়াম, দমচর্চা বা ব্রিদিং এক্সারসাইজ। নিয়মিত দমচর্চা করলে আপনি থাকবেন প্রশান্ত ও প্রাণবন্ত। মাইগ্রেন বা মাথাব্যথা থাকলে তা হবে দূর।