বুদ্ধিমতী হওয়ার ৫ কৌশল

published : ৯ মার্চ ২০২৩

৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস। এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য হলো- ‘ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন’।

একজন তরুণী থেকে মা কিংবা সাধারণ নারী থেকে কর্মজীবনের শীর্ষে অসাধারণ হয়ে ওঠা নিয়ে প্রতিটি নারীর জীবনেই কিছু না কিছু লড়াইয়ের গল্প থাকে। সেই সংগ্রামকে সম্মান জানায় নারী দিবস।

সংগ্রামী মা হোক কিংবা সফল কর্মজীবী নারী, প্রতিটি নারীর-ই রয়েছে লড়াইয়ের গল্প

সায়েন্স অ্যালার্ট-এ প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের ইউসিএল বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক ইয়ুয়ান চেন ও নৃবিজ্ঞানের অধ্যাপক রুথ মেস একটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন- নারী ও পুরুষের মধ্যে কে বেশি পরিশ্রম করে?

গবেষণা রিপোর্টে দেখা যায়, নারীরা পুরুষের চেয়ে অনেক বেশি পরিশ্রম করেন!

আর এই পরিশ্রম যত বুদ্ধিদীপ্ত হবে তত তা ভারী করবে সাফল্যের পাল্লা।

তাহলে দেরি কেন? চলুন জেনে নিই এমন ৫ কৌশল, যা একজন নারী হিসেবে আপনাকে করবে অধিক বুদ্ধিমতী-

১. স্পষ্টবাদী কিন্তু বিনয়ী হোন

সম্পর্কের জটিলতায় সবসময় সরাসরি কথা বলুন। কাউকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করবেন না। কারণ সর্ম্পক যত সরাসরি হবে, ভুল বোঝাবুঝি তত কম হবে।

একটি সমীক্ষা বলছে, সেই নারী তত বুদ্ধিমতী যিনি নিজের মনের ভাব সহজভাবে প্রকাশ করতে পারেন।

অর্থাৎ মানসিক দূরত্ব কমানোর জন্যে যিনি স্পষ্টভাবে কিন্তু বিনয়ের সাথে তার মনের কথা তুলে ধরতে পারবেন তিনি নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন।

২. নেতিবাচক আবেগ নিয়ন্ত্রণ করুন

বর্তমানে প্রযুক্তির কল্যাণে এখন জীবন দৌড়াচ্ছে ঠিকই, কিন্তু স্মার্টফোনের দৌরাত্ম্যে বদলে যাচ্ছে রক্তের সম্পর্কগুলো। বাড়ছে অপ্রয়োজনীয় সম্পর্ক, সম্পর্কচ্ছেদ, নেতিবাচক আবেগ ও অনুভূতি। যা টানাপোড়েন সৃষ্টি করছে পারিবারিক ও বন্ধু মহলে।

তাই মানসিক চাপ সামলে যে-কোনো সম্পর্কের সৌন্দর্য বজায় রাখা নিঃসন্দেহে একটি আর্ট! যারা নিজেদের সমস্যার জন্যে অন্যকে দোষারোপ করতে অভ্যস্ত তাদের পক্ষে এই মানসিক চাপ সামলানোটা বিরাট চ্যালেঞ্জ।

কিন্তু সমস্যা এলেও ধীরস্থির হয়ে সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে যে নারী সামনে এগোতে পারেন সে নারী-ই কৌশলী ও বুদ্ধিমতী।

সাফল্যের জন্যে নেতিবাচক আবেগ নিয়ন্ত্রণ জরুরি (ছবিসূত্র- দৈনিক ইত্তেফাক)

তাই মানসিকভাবে স্থির ও প্রশান্ত থাকতে সবসময় ইতিবাচক চিন্তা করুন। নেতিবাচক চিন্তা, কথা ও কাজ থেকে বিরত থাকুন।

৩. দৈনন্দিন রুটিন তৈরি করুন ও তা মেনে চলুন

রুটিন হবে সহজে অনুশীলনযোগ্য। নিজের যত্নায়ন ও দিনের কাজগুলো যতটা সম্ভব নির্দিষ্ট সময়ে করতে সচেষ্ট হোন, এমনকি বেড়াতে গেলেও।

পর্যাপ্ত ঘুম ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করবে, স্মৃতিশক্তি বাড়াবে। মেদস্থূলতা, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, স্ট্রোক ও ডিপ্রেশনের ঝুঁকি কমাবে এবং নতুন কিছু শেখার সামর্থ্য বাড়াবে।

তাই প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানো ও জেগে ওঠার অভ্যাস গড়ুন, এমনকি ছুটির দিনেও। নিশাচর নয়, সারাদিন কর্মচঞ্চল ও উদ্যমী থাকাটাই প্রকৃত বুদ্ধিমত্তার প্রকাশ।

৪. আশাবাদী ও বিশ্বাসী মানুষদের সংস্পর্শে থাকুন

তথ্য বিস্ফোরণের এই যুগে নেতিবাচক তথ্যের কারণে কে ভালো আর কে মন্দ বোঝা কঠিন। বাছবিচার জরুরি।

যাচাই-বাছাই করে এমন মানুষ বা সঙ্ঘের সাথে থাকুন যারা আপনাকে ভালো কাজের উৎসাহ দেবে, বিপদে সাহস ও পরামর্শ দেবে এবং সার্বিক কল্যাণের জন্যে দোয়া করবে।

ইতিবাচক মানুষের সংস্পর্শে থাকলে আপনি ইতিবাচক হবেন এবং স্ট্রেস রিলিফ হবে। অন্তরে আসবে প্রশান্তি, বুদ্ধিহীনেরা যা সবার আগে হারায়!

৫. মেডিটেশন করুন

একটা সমীক্ষায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত মেডিটেশন করেন, তাদের মানসিক ফিটনেস ও বুদ্ধিমত্তা যারা করে না তাদের চেয়ে বেশি!

নিয়মিত মেডিটেশন আপনার দক্ষতা-যোগ্যতা-বুদ্ধিমত্তাকে শাণিত করবে

কর্মজীবী নারীদের অনেকেই একইসাথে পরিবার ও অফিস সামলাতে হিমশিম খান। এতে তাদের মেজাজ হচ্ছে খিটমিটে, জবস্ট্রেস নেতিপ্রভাব ফেলছে মনোদৈহিক স্বাস্থ্যের ওপর।

এই স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ এবং সার্বিক দিকের ভারসাম্য রক্ষায় সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হলো নিয়মিত মেডিটেশন অনুশীলন

মেডিটেশন দেহমনকে স্থির করবে, মানসিক প্রশান্তি বাড়াবে, মস্তিষ্কে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়িয়ে আপনাকে করে তুলবে আরও বেশি কর্মক্ষম। স্ট্রেস হরমোন কমিয়ে আপনার ত্বককে করবে লাবণ্যময়। আপনি হবে আত্মবিশ্বাসী ও করিৎকর্মা তথা বুদ্ধিমতী!