আপনি না, ক্লান্তিই যখন ক্ষমা চাইবে!

কাজ করতে করতে আমরা প্রায়শই ক্লান্ত হয়ে পড়ি। কিন্তু একটি শিশু সচরাচর ক্লান্ত হয় না। যতক্ষণ সে জেগে থাকে, সে প্রাণবন্ত থাকে। আবার ঘুমের সময় হলে এক নিমিষেই ঘুমিয়ে পড়ে। ঘুম থেকে উঠে আবার সে প্রাণবন্ত। কারণ তার ঘুমটা হয় গভীর ঘুম।

কিন্তু বড়দের ক্ষেত্রে দেখা যায় একই রকম এনার্জি ও প্রাণবন্ততা নিয়ে দীর্ঘক্ষণ কাজ করা সম্ভব হয় না। ঘুমের ক্ষেত্রে তাকে চেষ্টা করে ঘুমাতে হয়।আবার ঘুম থেকে উঠেও সে প্রাণবন্ত নয়। অনেকের তো ঘুম থেকে উঠে মেজাজ খারাপ থাকে। কারণ তার ঘুম যথার্থ হয়নি।

এই যথার্থতা কিন্তু কত দীর্ঘ সময় ঘুমানো হলো তার উপর নির্ভর করে না। এটা নির্ভর করে ঘুম কতটা গভীর হলো, নির্বিঘ্ন হলো তার উপর।

আদৌ কি আমাদের ঘুমের কোনো প্রয়োজন আছে? একজন ভারতীয় যোগী-সাধক বলছেন- মানুষের জন্য ঘুম কোনো জরুরী বিষয় নয়। জরুরী হলো বিশ্রাম। অধিকাংশ মানুষ ঘুমকে বিশ্রামের মাধ্যম হিসেবে নিয়েছে। কিন্তু আপনি যদি না ঘুমিয়েও শরীরকে বিশ্রাম দিতে পারেন তো শরীর তা মেনে নিবে। যেমন আপনি যদি আধ ঘন্টা গভীরভাবে ধ্যানমগ্ন থাকতে পাবেন তো আপনি পরিপূর্ণ বিশ্রাম পাবেন যা আপনার দু’ঘন্টা ঘুমের কাজ করবে।

তো একটা শিশু যখন ঘুমায় তখন তার পরিপূর্ণ বিশ্রাম হয় ফলে সে প্রাণবন্ততা নিয়ে জেগে ওঠে। কিন্তু বড়রা যখন ঘুমায় তখন তার পরিপূর্ণ বিশ্রাম হয়না। ফলে ঘুম থেকে উঠেও ক্লান্তি থেকে যায়।

কিন্তু কেন বড়রা ঘুমের মধ্যে পরিপূর্ণ বিশ্রাম পায় না? আসুন প্রযুক্তির সাথে তুলনা করে বোঝার চেষ্টা করি। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে মোবাইল ফোনের সব থেকে জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম হলো অ্যানড্রয়েড। কয়েক বছর আগেও মানুষ মোবাইল ফোনসেট কিনতো সেটের বাহ্যিক সৌন্দর্য দেখে; অভ্যন্তরীণ ক্ষমতা কোনো গুরুত্বপুর্ণ বিষয় ছিলনা। কিন্তু বর্তমানে অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্য ও ক্ষমতা আগে দেখা হয় এবং সেটা বেশ ভালোভাবেই।

মোবাইল সেটের RAM, ROM কত বেশি, ইন্টার্নাল মেমোরি কত বেশি, অপারেটিং সিস্টেম কত লেটেস্ট এগুলো ফোনসেট কেনার বেসিক খোঁজখবর। এগুলো প্রয়োজন কারণ অ্যানড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে ইচ্ছামতো প্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশন ইন্সটল করা যায়। যা পূর্বে ব্যবহৃত জাভা বা সিমবিয়ান অপারেটিং সিস্টেমে সহজে করা যেত না বা মানুষ করতে জানতো না বা প্রয়োজনবোধ করতো না। কিন্তু অ্যানড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে মানুষ প্রয়োজনীয় অপ্রয়োজনীয় প্রচুর অ্যাপ্লিকেশন ইন্সটল করে থাকে যা মোবাইল সেটের ROM-এ জমা হতে থাকে এবং RAM-এর সহযোগিতায় অ্যাপ্লিকেশনগুলো পারফর্ম করে। এই কর্মযজ্ঞে অটোমেটিক্যালি প্রচুর সাপোর্টিং ফাইল ও অপ্রয়োজনীয় cache ফাইল তৈরী হতে থাকে যা ROM ও RAM উভয় স্পেসকে পূর্ণ করতে থাকে। অ্যাপ্লিকেশনগুলোর ভারিক্কি ও স্পেস কমে যাবার কারণে সামগ্রিক পারফরমেন্স স্লো হতে থাকে এবং মোবাইল সেটটিও ধীরগতির হয়ে পড়ে; সহজে বলা যায় ক্লান্ত হয়ে পড়ে। এজন্য মাঝেমাঝেই Rom Cleaner টাইপ অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে অপ্রয়োজনীয় ফাইল ক্লিন করতে হয় বা রিসেট দিয়ে ফোনসেটের গতি ফিরিয়ে আনতে হয়।

একজন মানুষ যখন শিশু থাকে তখন তার মস্তিষ্কে খুব কম প্রোগ্রাম ইন্সটলড থাকে। ফলে তার টেনশন নাই, স্ট্রেস নাই। টেনশন ও স্ট্রেস মুক্ত থাকার কারণে তার ঘুম ভাল হয়, বিশ্রাম পরিপূর্ণ হয়। সজাগ অবস্থায় তার পারফরমেন্স ভাল থাকে, ঝিমুনি বা ক্লান্তি আসেনা। বড়দের মস্তিষ্কে খুব ভারি ভারি প্রোগ্রাম ইন্সটলড থাকে। প্রতিনিয়ত তাকে নানাবিধ চিন্তা-পরিকল্পনা করতে হয়, সেগুলো এক্সিকিউট করতে হয়, নানান কাজে পারফর্ম করতে হয়। অটোমেটিক্যালি টেনশন, স্ট্রেস, এংজাইটি তৈরী হতে থাকে যা সামগ্রিক পারফরমেন্সের উপর প্রভাব ফেলে। টেনশন, স্ট্রেসের কারণে স্নায়ু শিথিল হয়না। এর প্রভাব পড়ে ঘুমের উপর। ঘুম হয় অপর্যাপ্ত, অপরিপূর্ণ। গভীর ঘুম না হওয়ার কারণে শরীরও বিশ্রাম পায়না। বিশ্রামের অভাবে শরীর অবসন্ন হয়ে পড়ে, কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়, কর্মদক্ষতা কমতে থাকে। আর স্নায়ু শিথিল না হতে পারার কারণে মন-মস্তিষ্ক ক্লান্তিতে ভেঙ্গে পড়ে।

শরীর-মনকে চাঙ্গা, প্রাণবন্ত, ক্লান্তিহীন রাখার জন্যে Rom Cleaner-এর মতো স্ট্রেস ক্লিনিং সিস্টেম ডেভেলপ করা জরুরী। যা মন থেকে যাবতীয় টেনশন, ভয়, বিষণ্ণতার মত ক্ষতিকর প্রোগ্রামগুলো অটোমেটিক ক্লিন করবে। স্নায়ু থাকবে চাপমুক্ত। ঘুম হবে গভীর যা শরীরকে প্রয়োজনীয় বিশ্রাম দেবে। যুগে যুগে সাধকগণ এই ক্লিনিং সিস্টেম ব্যবহার করেছেন দক্ষতার সাথে। যে কারণে তাঁরা কখনো ক্লান্ত হতেন না, বিষণ্ণতায় ভুগতেন না, ঝিমিয়ে পড়তেন না।

এই ক্লিনিং সিস্টেম হলো মেডিটেশন। মেডিটেশন স্নায়ু-মনকে শিথিল করে, পরিচ্ছন্ন করে। প্রয়োজনীয় তথ্যের পূনর্বিন্যাস ঘটায়। টেনশন ও ক্লান্তি দূর করে, প্রশান্তি সৃষ্টি করে। শরীরে ও মনকে যথার্থ বিশ্রাম দেয়। আপনি যদি সবসময় প্রাণবন্ত থাকতে চান, ক্লান্তিহীন চাঙ্গা থাকতে চান তো মেডিটেশন নামক প্রোগ্রামটি আপনার বায়ো-সুপার কম্পিউটারে ইন্সটল করে ফেলুন এবং প্রতিদিন দু’বার প্রোগ্রামটি ব্যবহার করুন।